রাতে হঠাৎ হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়, ভেঙে পড়ি শরীরের দিকে তাকিয়ে। সুস্থ পা'টাকে চিরকালের জন্য অসুস্থ বানিয়ে দিয়েছে কিছু হাসপাতাল-সন্ত্রাসী। আমার আর বাকি রাত ঘুম আসে না।
হাঁটুর ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পর তাড়াহুড়ো করে হিপ কেটে বাদ দিয়েছে, ভেবেছিলাম ভাল চিকিৎসা হয়েছে বুঝি, চারদিন পর্যন্ত হাসপাতালের ঘরটিতে বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ করেছি। পাঁচদিনের দিন টনক নড়লো, মারাত্মক কোনও ভুল হয়েছে, বা জঘন্য এক ক্রাইম হয়েছে, যখন লুকিয়ে রাখা এক্সরে রিপোর্ট হাতে এলো। এক্সরে রিপোর্ট বলছে 'হিপ ঠিকঠাক'। 'হিপ যদি ঠিকঠাক তাহলে হিপ কেটেছো কেন?' এর উত্তর, 'ওই ঠিকঠাক রিপোর্টটা ঠিক না। হাড় তো গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গেছিল, সে কারণে ভেঙেছে।' এর পর হাড়ও স্ক্যান করে দেখলাম, হাড় একেবারে ইস্পাতের মতো, পাঁচশ বছরেও ভাঙবে না। আমি আর কাউকে কোনও প্রশ্ন করিনি। প্রাণ বাঁচাতে হাসপাতাল ছেড়েছি। কিছুদিন আগে হাসপাতাল-সন্ত্রাসীদের দেওয়া কাগজ পত্র ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন বিদেশের ডাক্তার। আমার নয়, অন্য কারও জন্ম তারিখ সবকিছুতে। যদি হিপ কেটে নেওয়া আমার কোনও রোগের চিকিৎসা হতো, তাহলে সার্জারির পর কয়েকদিন না বুঝে না জেনে যেমন স্বাভাবিক এবং হাসিখুশি ছিলাম, তেমন স্বাভাবিক এবং হাসিখুশি আজও থাকতে পারতাম। রাতে ঘুমও হতো, আচমকা ঘুম ভেঙে যেত না, আর ঘুম ভেঙে গেলে সাদা দেওয়ালের দিকে ভাষাহীন চোখে তাকিয়ে থাকতে হতো না।
অন্যায় মানতে পারি না বলেই কষ্ট হয়। হাসপাতাল-সন্ত্রাসের এত বড় ভিক্টিম কখনও হবো, এ আমার চরম কোনও দুঃস্বপ্নতেও ছিল না। অনেকে বলে কেন মামলা করছি না সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। করছি না অর্থকড়ি অত নেই বলে, পায়ের তলায় মাটি নেই বলে। ভিসাটা চলে গেলে কোথায় কোন দেশে আবার কী করে নাও ভেড়াব জানি না বলে। ভিসা! আজ তো ভিসা শেষের দিন, নতুন ভিসা তো আজও হাতে এলো না। কী কারণ ভিসার মেয়াদ না বাড়ানোর? এমন তো ঘটেনি আগে! নামী দামী হাসপাতালে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি বলে?
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)