বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৭ ভাদ্র ১৪৩১
ad
নৌ বাণিজ্য দপ্তর ও একজন ক্যাপ্টেনের সফলতার গল্প
ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪:২২ পিএম, ২১ মার্চ ২০২৩

১০ অক্টােবর ২০১৯, ক্যাপ্টেন মো: গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, নৌ বাণিজ্য দপ্তর চট্টগ্রামে প্রিন্সিপাল অফিসার হিসাবে কাজে যোগদান করেন। যোগদানের পূর্বে বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৩টি। কিন্তু প্রিন্সিপাল অফিসার হিসাবে জনাব ক্যাপ্টেন মো: গিয়াসউদ্দিন আহমেদ যোগদানের পর হতে ২ বছরে সেই সংখ্যা ৮০টিতে উন্নীত করেছে যা স্বাধীনতা লাভের পর হতে সর্বোচ্চ।

 

এখানে উল্লেখ্য যে, নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নৌ পরিবহণ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রাধীন নৌ বাণিজ্য দপ্তর ১টি সরকারী প্রতিষ্ঠান। চলুন একনজরে দেখে নেয়া যাক ক্যাপ্টেন মো: গিয়াসউদ্দিন আহমেদ নৌ বাণিজ্য দপ্তর চট্টগ্রামে প্রিন্সিপাল অফিসার হিসাবে কাজে যোগদান এর পর নৌ বাণিজ্য দপ্তরের সাফল্য।

 

  • উন্নয়নের অক্সিজেন নামে খ্যাত রাজস্ব আদায় বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রাণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে ও উন্নয়নে বিরাট অবদান রেখেছে। ফিশিং বোট, কার্গো বোট, ফিশিং ট্রলার, ট্যাংকার, কোস্টাল, হোম ট্রেড ও বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

  • চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে নিজস্ব ভবন নির্মানের জন্য ৫.৫৮ কাঠা জমি বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। ১০ তলা বিশিষ্ট মেরিন কমপ্লেক্স ভবন নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জরাজীর্ন লাইট হাউজগুলো আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নৌ বাণিজ্য দপ্তর, চট্টগ্রাম ইতোপুর্বে কোন কনফারেন্স রুম ছিলনা বর্তমানে কনফারেন্স রুম উদ্বোধন করা হয়েছে। ঔষধ প্রশাসন থেকে কক্ষ বরাদ্দ নেয়া হয়েছে।

 

  • নৌ বাণিজ্য দপ্তর চট্টগ্রামে জবাবদিহিতা, সু-শাসন প্রতিষ্টা ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত জিরো ট্রলারেন্স নীতি নিয়ে এসেছেন তিনি। সকল ডুকুমেন্টস সঠিক ও সরকারী ফি জমাদান নিশ্চিত হলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সেবাগ্রহীতাদের সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে এখানে। এ টু আই, ই নথি, সিটিজেন চার্টার, জি টু জি ইত্যাদি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

 

  • ফাইল কেবিনেট, ওয়ার্কস্টেশন প্রত্যেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য কম্পিউটার, ইন্টারকম, মহিলাদের জন্য আলাদা অজুখানা, ওয়াশরুম ও নামাজের স্থান নির্মাণ করা হয়েছে। অন লাইনে এনওসি, ওয়েভার সেবা প্রদান চালু করা হয়েছে। অত্র দপ্তরের সকল কাজ অন লাইনে প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ডিজিটাল এন্ট্রি ও ডিজিটাল হাজিরা চালু করা হয়েছে।

 

  • ইতোপূর্বে সেবা গ্রহীতাদের জন্য নৌ বাণিজ্য দপ্তরে কোন ওয়েটিং রুম চালু ছিল না বর্তমানে তা চালু করা হয়েছে। নৌ বাণিজ্য দপ্তর, চট্টগ্রাম কে আধুনিকিকরণ করা হয়েছে। জাহাজের সংখ্যা বহুগুনে বৃদ্ধি পাওয়ায় নাবিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

 

  • অনলাইনে এনওসি, ওয়েভার সেবা প্রদান চালু করা হয়েছে। ডিজিটাল এন্ট্রি ও ডিজিটাল হাজিরা চালু করা হয়েছে। রাজস্ব আদায় বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার নির্দেশিত এটুআই প্রকল্প, জিটুজি, ই-নথি, এসওপি, সিটিজেন চার্টার ইত্যাদি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। ফাইল কেবিনেট, ওয়ার্ক স্টেশন, প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য নিজস্ব কম্পিউটার, ইন্টারকম ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া জরাজীর্ন নৌ বানিজ্য দপ্তর, খুলনার আধুনিকায়ন করা হয়েছে। রাজস্ব আদায় বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অনলাইনে এনওসি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। পায়রা বন্দরে নতুন অফিস স্থাপন, কার্যক্রম চালু ও কর্মকর্তা-কর্মচারী পদায়ন করা হয়েছে।

 

  • নৌ বানিজ্য দপ্তর, চট্টগ্রামে কর্মরত সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জবাবদিহিতা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ইত্যাদির লক্ষ্যে ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। পূর্বের তুলনায় ফিশিং বোট, কার্গো বোট, ফিশিং ট্রলার, হোম ট্রেড, ট্যাংকার, কোষ্টার ও বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা বহুগুনে বৃদ্ধি করেছি যা দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রেখেছে এবং প্রান-চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।

 

 

 বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ট্যাংকার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মজুমদার ও নৌ বাণিজ্য দপ্তর চট্টগ্রামের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ সহ অতিথিগণ (ছবিঃ সংগ্রহ)

 

 

ক্যাপ্টেন মো: গিয়াসউদ্দিন আহমেদ এর সফলতায় তিনি জানান, আমি এখানে যোগদানের পর হতে উন্নয়নের অক্সিজেন নামে খ্যাত নৌ বাণিজ্য দপ্তরে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রাণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে ও উন্নয়নে বিরাট অবদান রেখেছে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচলে নৌ বাণিজ্য দপ্তর চট্টগ্রাম বিরাট ভূমিকা রাখছে। এতে করে অনেকের চাকরীর সুযোগ হয়েছে। সেবার মান বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে সকল সেবাগ্রহীতাদের সেবা নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। জাহাজের সংখ্যা বহুগুনে বৃদ্ধি পাওয়ায় নাবিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

 

বাংলাদেশ পতাকাবহী জাহাজ সমূহ আকৃতিগতভাবে ৩০০০০ থেকে ১০০০০০ টন পর্যন্ত মালামাল বহন করার ক্ষমতা রাখে। এসব জাহাজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে দেশের ভাবমূর্তি বহুগুনে বৃদ্ধি করেছে। এসব বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজে ৩০০০ জন বাংলাদেশী নাবিক কর্মরত রয়েছে। সকল তথ্য ও সরকারী ফি প্রাপ্ত হওয়া সাপেক্ষে ২৪ থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সনদ জারী করা হয়। সরকার ঘোষিত ছুটির দিন সমূহে অন লাইনে অফিসে সেবা প্রদান করা হয় ও ই-মেইল এর জবাব প্রদান করা হয়। যাতে দেশের বাইরে বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজ সমূহ সমস্যার সম্মুখীন না হয়।

 

তিনি বলেন, বিদেশী পতাকাবাহী জাহাজের মাধ্যমে পন্য পরিবহন করলে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরেও চলে যায়। বাংলাদেশী পতাকাবাহী জাহাজের মাধ্যমে পন্য পরিবহন করলে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশে থাকে। যা বাংলাদেশী নাবিকদের চাকরী ও দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখছে।