ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক ৬ মে। এর মধ্য দিয়ে তিনি ব্রিটেনসহ কমনওয়েলথভুক্ত ১৫ দেশের রাজা হচ্ছেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, ব্রাহামাস, বেলিজ, গ্রেনাডা, জ্যামাইকা, পাপুয়া নিউগিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, টুভালু, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাদাইনসের রাজা হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।
তিনি হবেন ব্রিটেনের ৪০তম রাজা। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে সীমিত তবে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই রাজকীয় অভিষেক হবে। তার মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ গত বছরের সেপ্টেম্বরে মারা যাওয়ার পর তিনি রাজার দায়িত্ব নেন।
ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে এই অভিষেক অনুষ্ঠানে রাজা ও কুইন কনসর্টকেও মুকুট পরানো হবে। এই অভিষেক অনুষ্ঠান মূলত অ্যাংলিকান খৃস্টানদের একটি ধর্মীয় সভা; যা আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবারি পরিচালনা করে থাকেন।
অভিষেকে রাজার মাথায় ও হাতে পবিত্র তেল মাখিয়ে দেওয়া হবে। রাজকীয় প্রতীক হিসেবে তিনি রাজদণ্ড ও রাজগোলক গ্রহণ করবেন।
অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত পর্বে রাজা তৃতীয় চার্লসের মাথায় সেন্ট এডওয়ার্ডের মুকুট পরিয়ে দেবেন আর্চবিশপ। মুকুটটি ১৬৬১ সালে তৈরি করা হয়েছিল।
এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, কত দিন চার্লস এই ১৫ দেশের রাজা বা রাষ্ট্রপ্রধান থাকতে পারবেন? মায়ের মতো গ্রহণযোগ্যতা তারও থাকবে, নাকি একে একে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের আলঙ্কারিক পদ ছাড়তে হবে একসময়ের ঔপনিবেশিক দেশটির রাজাকে?
আটলান্টিক মহাসাগর ও ক্যারিবীয় সাগরের মধ্যবর্তী জায়গায় ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস। সেখানে বিতর্ক রয়ে গেছে যে, দেশটি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ব্রিটিশ রাজার অধীনতা মানবে কি না।
ব্রিটিশ রাজাকে রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে সরাতে হলে ক্যারিবীয় দেশগুলোয় গণভোট আয়োজন করতে হবে। শুধু বেলিজের পার্লামেন্ট চাইলে নিজেরাই এ উদ্যোগ নিতে পারে।
২০০৯ সালে সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাদাইনসে এমন একটি গণভোট আয়োজন করা হয়েছিল। ওই গণভোটে ৪৫ শতাংশ ভোটার রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে তাদের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দেখতে চাননি।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের মতে, একদিন না একদিন রাজতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসবে অস্ট্রেলিয়া। এটা অনিবার্যভাবে হবে।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স মনে করেন, একদিন তার দেশ রাজতন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে দেবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের যতটা গ্রহণযোগ্যতা ছিল, ততটা তৃতীয় চার্লসের নেই। তাই কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তার টিকে থাকা কঠিন হতে পারে।