মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ad
উত্তাল বুয়েট, লেজুড়বৃত্তি ছাত্ররাজনীতি রুখে দেওয়ার অঙ্গীকার
ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪:৫৮ পিএম, ০৮ আগস্ট ২০২৩

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আলোচিত আবরার ফাহাদ হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকায় আজীবন বহিষ্কার হওয়া আশিকুল ইসলাম বিটুর ক্লাসে অংশগ্রহণ নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন।

এই পরিস্থিতিতে তারা বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে অবস্থান নিয়ে সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান রুখে দিতে শপথবাক্য পাঠ করেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। তারা লেজুড়বৃত্তি ছাত্ররাজনীতি রুখে দেওয়ারও অঙ্গীকার করেন।

শপথগ্রহণ শেষে বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে যদি পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, আমরা একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকব। আশা করছি বুয়েট কর্তৃপক্ষ দ্রুততম সময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

শপথবাক্যে বলা হয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কল্যাণ ও নিরাপত্তার নিমিত্তে আমার ওপর অর্পিত ও সামষ্টিক, নৈতিক ও মানবিক সব প্রকার দায়িত্ব সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার জ্ঞাতসারে হওয়া অন্যায় অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমি সর্বদা সোচ্চার থাকব।

এতে আরও বলা হয়, আমি আরও প্রতিজ্ঞা করছি যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সব প্রকার সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থানকে আমরা সম্মিলিতভাবে রুখে দেব। নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার আমরা সমূলে সমূলে উৎপাটিত করব। এই আঙিনায় আর কোনো নিষ্পাপ প্রাণ যেন ঝরে না যায়, আর কোনো নিরপরাধ যেন অত্যাচারের শিকার না হয়—তা আমরা সবাই মিলে নিশ্চিত করব।

শপথগ্রহণ শেষে বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে যদি পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, আমরা একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকব। আশা করছি বুয়েট কর্তৃপক্ষ দ্রুততম সময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

শপথ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৩০ জুলাই ২৪ জন বর্তমান শিক্ষার্থীসহ ৩৪ জন সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওড়ে নাশকতার পরিকল্পনাকারী সন্দেহে আটক হয়। পরে মহামান্য আদালতের মাধ্যমে তাদের জামিন মঞ্জুর হয়। এ বিষয়ে আমরা রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার ওপর আস্থা রেখে একটি সুষ্ঠু ও দ্রুত বিচার আশা করছি। যদি তারা প্রত্যেকেই দোষী প্রমাণিত হন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবশ্যই তাদের বিপক্ষে থাকবেন। একইভাবে যদি তাদের মধ্যে কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হন, তবে নির্দোষরা যেন আর কোনোভাবে কোনো হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে আমরা সচেষ্ট থাকব এবং বুয়েট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করব।

শিক্ষার্থীরা বলেন, সব ধরনের লেজুড়বৃত্তি ছাত্ররাজনীতি ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে আমাদের যে দৃঢ় অবস্থান, তা থেকে আমরা কোনো অবস্থাতেই সরে আসব না। ছাত্ররাজনীতি ও মৌলবাদ চর্চা বুয়েট ক্যাম্পাসে কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না, তা সে যে দলেরই হোক না কেন। ইতোপূর্বে ছাত্রলীগের সেন্ট্রাল কমিটিতে পদপ্রাপ্ত দুই শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতির কার্যক্রমে যুক্ত কি না, অন্য কাউকে প্রভাবিত করছেন কি না এই মর্মে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে এবং প্রশাসন থেকে তদুপরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বুয়েটিয়ান ফেসবুক পেজ আর অভিভাবকদের সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততা নেই বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও সম্প্রতি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বুয়েটের নিয়মিত শিক্ষার্থীর পদ পাওয়া, পরবর্তী সময়ে পদত্যাগ, ট্যুরে গিয়ে আটক ও সর্বশেষ বিটু ক্লাসে ফেরা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকবার কর্মসূচি পালন করেন। সোমবার (৭ আগস্ট) তারা শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেন।